নীলফামারী প্রতিনিধি:নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার নাউতারা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও উপজেলা শ্রমিক লীগ নেতা আশিক ইমতিয়াজ মোর্শেদ মনি আদালতে জামিন নিতে এসে গ্রেফতার হয়েছেন।
রোববার (১৩ জুলাই) দুপুরে জেলা সদরের একটি আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে বিজ্ঞ বিচারক তা নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
জানা যায়, চলতি বছরের শুরুতে ডিমলার কুটিরডাঙ্গা গ্রামের এক ভুক্তভোগী তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ এনে মামলা করেন। মামলাটি নীলফামারী জেলা আদালতে জিআর নম্বর ২৬/২৪ হিসেবে রেকর্ডভুক্ত হয়। অভিযোগে বলা হয়, চেয়ারম্যান মনি ছাত্রলীগের কিছু কর্মীকে ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে নিরীহ সাধারণ মানুষের জমি দখল, চাঁদা আদায় এবং অর্থ আত্মসাৎ করে আসছিলেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ইমতিয়াজ মোর্শেদ মনি নীলফামারী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিন সরকারের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় ও রাজনৈতিক সহচর হিসেবে পরিচিত। এছাড়া তিনি এমপির ছেলে আশরাফুজ্জামান জুয়েল এবং আলোচিত আগুন খোয়া বাহিনীর প্রধান ফেরদৌস পারভেজের অন্যতম সহযোগী বলেও অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, তারা মিলে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভিন্ন প্রকল্পের সিংহভাগ কাজ নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিয়েছেন।
এছাড়াও, মনি ও তার ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে স্থানীয় স্কুলের নারী শিক্ষার্থীকে হয়রানির অভিযোগ রয়েছে, যা বিজ্ঞ আদালত পর্যন্ত গড়ায়। তার বাহিনীর বিরুদ্ধে এলাকাজুড়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েমের অভিযোগ করে আসছেন স্থানীয়রা। এসব কারণে দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিলেন মনি। অবশেষে জামিন নিতে এসে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন তিনি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ডিমলা ও নীলফামারীতে আন্দোলনকারীদের উপর হামলার মূল পরিকল্পক ছিলেন মনি। তার নেতৃত্বেই একাধিক হামলার ঘটনা ঘটে।
ইমতিয়াজ মোর্শেদ মনির গ্রেফতারের ঘটনায় ডিমলা ও আশপাশের এলাকায় স্বস্তি ফিরেছে বলে জানান স্থানীয়রা। অনেক ভুক্তভোগী বলেন, তার বাহিনীর চাঁদাবাজি, হুমকি ও জমি দখলের কারণে তারা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছিলেন। এখন তারা আইনের সঠিক প্রয়োগে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নুর মোহাম্মদ আদালতে মামলার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন। পর্যালোচনা শেষে আদালত তার জামিন আবেদন খারিজ করে ইমতিয়াজ মোর্শেদ মনিকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।