
নিজেস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেছেন, জনগণ বিএনপির আহ্বানে সাড়া দিয়ে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে সম্পৃক্ত হয়েছিল। কারণ তারা বিশ্বাস করতো একমাত্র বিএনপি পারে নতুন বাংলাদেশ গড়তে এবং তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে। সেই কারণে দীর্ঘ ১৬ বছর ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে একমাত্র বিএনপি নেতাকর্মীরা প্রতিদিন প্রতি মুহুর্ত লড়াই করেছে। আর কোন রাজনৈতিক শক্তি নেই যারা দীর্ঘ ১৬ বছরের প্রতিদিন প্রতি মুহুর্ত লড়াই করেছে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে এবং র্যাব পুলিশের বুলেটকে আলিঙ্গণ করে আমরা দেখিয়ে দিয়েছি গণতন্ত্রের প্রতি আমাদের নিবেদন এবং জনগণের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা কত টুকু দৃঢ়তা। সেই দীর্ঘ লড়াই, সংগ্রামে আমাদের আত্মত্যাগের একটি লক্ষ্য ছিল জনগণের কাঙ্খিত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বির্নিমাণ করা।
বিএনপির ৪৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার যশোর নগর ও সদর উপজেলা বিএনপি আয়োজিত র্যালী পূর্ব সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। টাউন হল ময়দানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, দলের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নার্গিস বেগম। পরে অধ্যাপক নার্গিস বেগম এবং অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের নেতৃত্বে টাউন হল ময়দান থেকে বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। র্যালীটি দড়াটানা মোড়, চৌরাস্তা মোড়, আর এন রোড় হয়ে মনিহারে গিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত আরও বলেন, দীর্ঘ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের বিভিন্ন ধাপে ধাপে অনেক রাজনৈতিক শক্তি আমাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। আমরা তাদের প্রতি অভিনন্দন জানাই। আমরা কারও অবদানকে খাটো করে দেখতে চাই না। কিন্তু ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর যারা গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা সামিল হয়েছিল, তারা আন্দোলনের কৃতিত্বে দাবি করছে। কিন্তু বিএনপি আজ পর্যন্ত একটি বারের জন্য আন্দোলনের কৃতিত্ব দাবি করেনি। বিএনপি মনে করে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের কৃতিত্ব যদি থেকে থাকে সেটি সমগ্র জনতার একক কোন রাজনৈতিক দলের না। সেই কারণে আমাদের নেতা তারেক রহমান ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের কৃতিত্ব সকল জনগণের সাথে ভাগ করে নিয়েছেন। দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশেষ করে স্বৈরাচার এবং ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে যশোর নগর এবং সদর উপজেলা বিএনপির অবদান স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। দীর্ঘ পথ যাত্রায় হাজার হাজার নেতাকর্মী মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে মাসের পর মাস বছরের পর বছর বাড়ি ঘর ছেড়ে কারাবাস করেছে। কারাগারের থেকে পিতার মাতার জানাজা পর্যন্ত অংশ নিতে পারেনি। এমন ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটার পরও শহীদ জিয়াউর রহমানের সূর্য্য সৈনিকেরা এবং তরিকুল ইসলামের উত্তরসূরীরা ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার কাছে মাথা নত করেনি। আমাদের দৃঢ়তা, একাগ্রতা, দেশপ্রেম ,জিয়া পরিবারের প্রতি আনুগত্য এবং দেশবাসীর প্রতি নিবেদন দেখিয়েছে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা যতই বড়ই ক্ষমতার ধর হোক না কেন, তার পতন নিশ্চিত।
তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ৫ আগস্ট গণঅভুত্থানের যে লড়াইয়ের কারণ ছিল সেটি আমাদের মাঝ থেকে যেন হারিয়ে না যায়। তাই ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে যাদের সবচেয়ে বেশি আত্মত্যাগ ছিল, তাদের সবচেয়ে বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে। বিগত ১৬ বছর যে ভাবে আপনারা নিজেদের ক্যারিয়ার,সুখ স্বাচ্ছান্দ্যকে বিসর্জন দিয়েছেন , ঠিক তেমনি নিজেদের সকল প্রলোভনকে ত্যাগ করতে হবে। তাহলে আমরা জনগণের স্বপ্নের কাঙ্খিত বাংলাদেশ গড়তে সক্ষম হবো।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নগর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম চৌধুরী মুল্লুক চাঁদ। নগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান মাসুম এবং সদর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাকের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান খান, মারুফুল ইসলাম, সদর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি অধ্যাপক আব্দার হোসেন খান, নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মোস্তফা তরফদার রয়েল, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম, নগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুমন আহমেদ, সদর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন লিটন প্রমুখ।
র্যালিতে উল্লেখযোগ্য নেতাকর্মীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক কমিটির সদস্য গোলাম রেজা দুলু, অ্যাড. মো. ইসহক, জাফর সাদিক, আব্দুস সালাম আজাদ, অ্যাড. হাজী আনিছুর রহমান মুকুল, সিরাজুল ইসলাম, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আঞ্জুরুল হক খোকন, নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এহসানুল হক সেতু, সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক হোসেন প্রমুখ।
Like this:
Like Loading...