
শেখ মাহতাব হোসেন ডুমুরিয়া খুলনা: ডুমুরিয়ায় সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ডুমুরিয়া স্বাধীনতা স্মৃতিসৌধ বিজয় স্তম্ভে ৩১ (একত্রিশ) বার তোপধ্বনি ও পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বিজয় দিবসের কর্মসূচি ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজ সবিতা সরকারের সভাপতিত্বে। দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন পালনের লক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসন পুলিশ প্রশাসনের ব্যবস্থাপণায় বিজয় স্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ , ডুমুরিয়া কলেজ মাঠে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, কুচকাওয়াজ ও শিক্ষার্থীদের ডিসপ্লে অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাংলাদেশ পুলিশ, আনসার, ফায়ার সার্ভিস, স্কাউট দলও অংশ নেয়।
শুভ উদ্বোধন করেন ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সবিতা সরকার, সহকারী কমিশনার ভূমি অমিত কুমার বিশ্বাস,থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল কালাম, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোঃ আশরাফুল কবির, কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ ইনসান ইবনে আমিন, সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সোহেল মোঃ জিল্লুর রহমান রিগান,প্রকৌশলী মোঃ দারুল হুদা, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দিবাষীশ বিশ্বাস,যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা এস এম কামরুজ্জামান, প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ হাবিবুর রহমান, ডুমুরিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর আলম, সাধারণ সম্পাদক শেখ মাহতাব হোসেন, আলোচনা সভা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
উল্লেখ্য নতুন প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে দৃঢ় প্রতিষ্ঠা করা ও শহীদদের যথাযথ মূল্যয়নের লক্ষ্যে বিশেষ নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে দিবসটির সকল কর্মসূচি পালিত হয়েছে।ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। এ বিজয় দিবস বাঙালি জাতির আত্মগৌরবের একটি দিন। এ বছর এ দিনটিতে বাঙালি জাতির বিজয়ের ৫৪ বছর পূর্ণ হলো।
১৯৭১ সালের এদিনে দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে বিশ্ব-মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন ও সার্বভৌম হানাদার মুক্ত বাংলাদেশ রাষ্ট্রের। ৩০ লাখ শহীদের আত্মদান আর দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম ও ত্যাগ-তিতিক্ষা এবং কোটি বাঙালির আত্মনিবেদন ও গৌরবগাঁথা গণবীরত্বে পরাধীনতার অভিশাপ থেকে মুক্তি পায় বাঙালি জাতি।
বাঙালি জাতি তার অধিকার আদায়ে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে মুক্তির আকাঙ্ক্ষায় উজ্জীবিত হয়ে উঠে। ধারাবাহিক আন্দোলনের মধ্য দিয়েই স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের পথে এগিয়ে নিয়ে যায় জাতি।
ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অবসানের মধ্য দিয়ে ১৯৪৭ সালে ভারতীয় উপমহাদেশ স্বাধীনতা লাভ করলেও ভ্রান্ত দ্বিজাতির তত্ত্বের ভিত্তিতে যে অসম পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয় তার শৃঙ্খলে আবদ্ধ করা হয় বাঙালি জাতিকে। পাকিস্তান রাষ্ট্রের শুরু থেকে বাঙালি জাতির ওপর শুরু হয় বৈষম্য, শোষণ, অত্যাচার নির্যাতন। অর্থনৈতিক, সরকারি চাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য সব দিক থেকে বঞ্চিত হতে থাকে বাঙালি তথা এ ভূখণ্ডের মানুষ।
পাকিস্তানের এই শোষণ বঞ্চনা আর অত্যাচার নির্যাতনের বিরুদ্ধে বাঙালি সোচ্চার হতে থাকে এবং ধাপে ধাপে পাকিস্তানের অত্যাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে উঠতে থাকে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষের পাশে সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে এগিয়ে আসে প্রতিবেশী দেশ ভারত। সরাসরি যুদ্ধে অংশ গ্রহণ এবং কোটি বাঙালিকে আশ্রয় দিয়ে ভারত সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। ওই সময় পরাশক্তি সোভিয়েত ইউনিয়নও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সমর্থন দিয়ে সরাসরি বাংলাদেশের পক্ষ নেয়। বিশ্ব জনমতও গড়ে উঠতে থাকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে।
দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী বাঙালির সাহসিকতার কাছে পরাজয় মেনে নিতে বাধ্য হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান) হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া যৌথবাহিনীর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে। এর মধ্য দিয়ে পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ নামে নতুন রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। ১৬ ডিসেম্বর বীর বাঙালির বিজয় দিবস হিসেবে ঘোষিত হয়। প্রতি বছর বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষ উৎসবমুখর পরিবেশে বিজয় দিবস উদযাপন করেন
শেখ মাহতাব হোসেন।