1. live@www.jashorebulletin.com : যশোর বুলেটিন : যশোর বুলেটিন
  2. info@www.jashorebulletin.com : যশোর বুলেটিন :
শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৪৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদারের বদলি শার্শার গোগা সীমান্তে বিজিবির অভিযানে পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেনসিডিল উদ্ধার স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে ঝিনাইদহে স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিষয়ক কর্মশালা যশোরে মাদকবিরোধী অভিযানে ২ কেজি গাঁজা উদ্ধার, নারী গ্রেফতার যশোরে তৃতীয় বর্ষে রূপান্তর প্রতিদিন তৃতীয় বর্ষের পদার্পন যশোর অভয়নগরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শিশুর মৃত্যু যশোরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় চিকিৎসক নিহত ভাড়ার টাকা না দেয়ায় অ্যাড. জনির  বিরুদ্ধে সমিতিতে অভিযোগ, শো-কজ যশোর-২ আসনে জামায়াতের মোসলেহ উদ্দিন ফরিদ প্রার্থী চট্টগ্রামের যুবককে যশোর এনে মারপিট ও কীটনাশক খাওয়ায়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে স্ত্রীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নড়াইলে হাড়িগড়া গ্রামে ৮০ শতক জমিতে গাছ পরিচর্যা করতে গেলে বাঁধা, কেয়ারটেকারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ

প্রতিনিধির নাম :
  • প্রকাশিত: শনিবার, ৩০ আগস্ট, ২০২৫
  • ৪২ বার পড়া হয়েছে

ফারুক আহমেদ, বিশেষ সংবাদদাতা : নড়াইল সদর উপজেলার হবখালী ইউনিয়নের হাড়িগড়া মৌজার হাড়িগড়া গ্রামে ৮০ শতক জমিতে প্রবেশে বাঁধা কেয়ারটেকারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার ২৯ আগস্ট বেলা ১১ টার সময় হবখালী গ্রামের ৮০ শতাংশ মেহগনির বাগানে গিয়ে ঘটনার বিস্তারিত জানা যায়।

নড়াইল সদর থানা গত মঙ্গলবার ২৬ আগস্ট ২০২৫ ইং তারিখের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মোঃ জহর আলী, পিং মৃত আব্দুল বারিক ফকির, মাতা-মোছাঃ শুকুরন নেছা, সাং- ডুমুরতলা, ডাকঘর- হবখালী, থানা ও জেলা নড়াইল, অভিযোগ করিতেছি যে, আমি আমার নিম্ন তপশীল জমি লইয়া বিজ্ঞ ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইবুনাল (এল,এস,টি) ২২/২০১৭ নং মোকদ্দমায় আসামী খন্দকার আবুল কালাম (৫৫), পিতা- মৃত মকছেদ খন্দকার, মোঃ সোহরাব হোসেন (৫০), শরীফ মোর‍্যা (৪৫), শাহাদাত হোসেন (৪৮), আরিফ মোল্যা (৪২), সর্ব পিং- মৃত কুটি মিয়া, এনামুল মোল্যা (৩০), পিং শাহাদাত মোল্যা, সর্ব সাং-হাড়িগড়া, ডাকঘর-হবখালী, ডাকঘর-হবখালী, থানা ও জেলা- নড়াইলগন উক্ত মোকদ্দমার দোতফা শুনানীতে পরাজয় বরন করিলে আমি উক্ত জমি লইয়া নাম পত্তন মোকদ্দমা করিয়া সরকারে সেরেস্তায় করাদায়ে সর্বসাধারনের জ্ঞাতসারে তপশীল জমিতে বিভিন্ন প্রকার ফলজ ও বনজ বৃক্ষাদি পরিচর্জা করিতে গেলে আসামীরা প্রকাশ্যে ও লোক মারফত হুমকি ধামকি দিতেছে যে, যদি সুযোগ পাই আমাদের তপশীল জমিতে পাইলে খুন জখম করিবে, জীবনে শেষ করিয়া ফেলিবে। আসামীরা অত্যান্ত দূর্দান্ত প্রভাবশালী লোক। তাহারা যে কোন মুহুর্তে আমাদের জমির গাছপালা কাটিতে বা পরিচর্যা করিতে গেলে মারধোর করিতে পারে এবং গুরুতর শান্তি ভঙ্গের কারন ঘটাইতে পারে। এক্ষণে আমি চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্য দিন পার করিতেছি।

মোঃ জহর আলী, পিং মৃত আব্দুল বারিক ফকির, সাং- ডুমুরতলা, থানা ও জেলা- নড়াইল তার অভিযোগ আসামীরা যাহাতে আমাদের তপশীল জমি কারকিতি করিতে বাধা সৃষ্টি করিতে না পারে, মারধোর করিতে না পারে, গাছ কটিতে না পারে এবং কোন শান্তি ভঙ্গের কারন ঘটাইতে না পারে এবং দোষীরা যেন শাস্তি পায় তাহার ব্যবস্থা করতে পুলিশ প্রশাসনের দৃষ্টিপাত কামনা করেন।
“তপশীল জমি”
থানা ও জেলা- নড়াইল, মৌজা ৩৪ নং হাড়িগড়া এস,এ, খং নং-৩০৮, আর, এস খং নং- ৭৯৫, সেঃ মেঃ ২৮৬৮ নং দাগ আর,এস ২৮৪৯ নং দাগে জমি ৮৩ শতক মধ্যে ৮০ শতক জমি নালিশী।

জহোর আলী ফকির জানান, ২০১২ সালের পূর্বে ৭-৮ বছর পূর্বে ৮০ শতাংশ জমি আমাদের দখলে ছিলো কিন্তু আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর আমাদের এরা তাড়িয়ে দিয়েছে।

বারিক ফকিরের ৫ ম পুত্র মহর আলী ফকির জানান, এই সম্পত্তি হচ্ছে আমার নানা আব্দুল করিম খানের, নানা হইতে আমার মা শুকুরন নেছা আর মা হতে আমরা। আমার নানার কুলে আর কেউ নাই আমার মা ছাড়া। এখন জমির দাগ নিয়ে অনেক দিন যাবৎ কেস মামলা চলছে কেসের মাধ্যমে আমরা পেয়ে গেছি জমি। এখন সরকার আমাদের দিয়ে দেছে আমরাও সেই কায়দায় ভোগ দখলে চলে গেছি বা আসছি, দেখেন কাগজপত্র দেখেই সরকার আমাদের জমি দিয়েছে। আমাদের বিপক্ষে মোকছেদ খন্দকার সেই বেচারা জমি জমা দিয়েছে আমার শশুর কুটি মিয়া মোল্লার কাছে। তার ছেলে আছে ওলিয়ার মোল্লা, আরিফ, শাহাদৎ, সোহরাব, শরীফ ও জরীপ। বাদীপক্ষ জানতে ও বুজতেছে মোতাহের হচ্ছে উকিল আর খরচ দিয়ে পারছে না তাই আমরা ডিক্রি পর্যন্ত যাবো। কাগজপত্র দেখে আইন মোতাবেক যেটা হবে সেটা মেনে নেবো।

বিলডুমুরতলা গ্রামের সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এই জমির মুল বাদী হলো আবুল কালাম খন্দকার যারা এখানে বাঁধা সৃষ্টি করতেছে তারা হলো তাদের কেয়ারটেকার। মুলত এদের কোন কাগজপত্র নাই আবুল কালাম খন্দকার কেসে হেরে যাওয়ায় নড়াইল শহর থেকে এখানে আসে না। এদেরকে দেখা-শোনা করতে বলেছিলো এরা, এদের সুনির্দিষ্ট কাগজপত্র নাই গাছগাছালি অনেক কিছু গায়ের জোরে বিক্রি করে দিয়েছে। কোর্ট ফকিরদের রায় দিয়েছে কাগজপত্র দেখে রায় মোতাবেক ফকিররা জমিতে আসলে এরা নিন্দামন্দ বিভিন্ন কথাবার্তা বলে। আমরা দীর্ঘ দিন জমির ফসল খেয়ে আসতেছি আমরা জমি থেকে উঠবো না। কিন্তু যারা জমি ভোগদখল করতেছে এদের অদ্যবধী যদি বলেন কিছু বলতে কিছু কোন কাগজপত্র এদের নাই। যদি কিছু থেকে থাকে এটা খন্দকার আবুল কালামের আছে তাও সে কোর্টে হেরে গেছে।

ডুমুরতলা গ্রামের সোহেল মোল্লা জানান, ঘটনা জানতে হলে গোড়ায় যেতে হবে বা পূর্বের ইতিহাস জানতে হবে? এই জমির মুল মালিক ইশারত খা, ইশারত খার কোন সন্তান ছিলো না। তারই একমাত্র আপন ভাই করিম খা, ইশারত খার কোন সন্তান ছিলো না তাই ভাইয়ের মেয়ে শুকুরন নেছা ওয়ারেশ হয়ে যায়। মুরব্বিদের মুখের কথা মোকছেদ খন্দকার নামে এক ব্যাক্তি সুদের ব্যবসা বা কারবার করতো তখন গ্রাম অঞ্চলে মান্যগণ্য মাতব্বরদের নিয়ে কাচারিতে শালিস হতো। তখন ইশারত খা অভাবের তাড়নায় জমিটা বন্দুক রাখে পরবর্তীতে জমি ফেরত নিবে ইশারত খা সেই বন্দুক নেওয়া টাকা জোগাড় করতে না পেরে মারা যায়। এই হাড়িগড়া মৌজায় ফজলু জমিদার ওনার কাছারিতে বসে এই জমি জমার ফেরত দেওয়ার শালিস হয়ে ছিলো। মোকছেদ খন্দকার বলেছিলো আমি হজ্জ করতে যাচ্ছি হজ্জ থেকে ফিরে এসে জমি আর ফেরত দেয়নি। সেই কায়দায় বেআইনিভাবে এই জমি আরেকজনদের কাছে বিক্রি করে। এই জমি ক্রয় করে কবির, জরিপ, শরিফ ও এনামুল এদের কাছে মোকছেদ খন্দকার জমি লিখে দিয়ে যায়নি। তারপরে শুকুরন নেছার পুত্ররা এই কেসের বাবদে কোর্টে মামলা দেয় মামলা করলে জমির রেকর্ড, রায় সহ ইত্যাদি তার ছেলেরা পায়। এই জমি ভোগদখল করতে আসলে এই জমির যে বাদী খন্দকার মামলা করেছে তারা জমি পাবে না বলে জেনেশুনে এই জমিতে আসে না। কিন্তু এই জমিটা যার বাড়ির পাশে যাদের দেখে শুনে রাখতে বলা হয়ে ছিলো তারা বিগত ১৫ বছর ক্ষমতাবানশীল লোক ছিলো ও আওয়ামীলীগ পরিবার ছিলো। বিধায় যাদের এই জমির প্রকৃত হক এই জমিতে আসলে তারা বাধা দেছে, মারধর করেছে ও দাবড়িয়ে দেছে এখনও পর্যন্ত এই কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। জমির যে মুল মালিক কোর্টে থেকে রায় পেয়েছে তাদের জমি দিচ্ছে না বিভিন্ন প্রকারের হুমকি ও ধামকি দিয়েছে।

নায়েব আলী ফকিরের স্ত্রী আখিরন নেছা জানান, এই জমি ফকিরদের দখলে ছিলো, আওয়ামীলীগ আসার পর জোর করে দখল করে নেয়।

জহোর আলী ফকির কাগজপত্র দেখান ডিসিআর মিউটেশন মামলা নম্বর ১১৯৭ (IX-I)/২০২৫-২৬ তারিখ ৭.০৮.২৫ হাড়িগড়া মৌজা আরএস খতিয়ান ৭৯৫, দাগ নং ২৮৪৯, এ ৮০ শতক জমি।
ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ রসিদ ডাঙ্গা কৃষি ২৩৪৮ টাকা ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে ১২ আগস্ট ২০২৫
এলসিটি ২২/১৭, ৫ ম পাতায় নালিশী জমিতে বাদীপক্ষের স্বত্বদখল না থাকায় অত্র বিবাদী পক্ষ ওয়ারেশ ও ক্রমিক ওয়ারেশ সূত্রে সুদীর্ঘ কাল শান্তিপূর্ণ ভাবে স্বত্ব দখল ভোগ করার এবং আর এস রেকর্ড যথাযথ ভাবে প্রস্তুত হওয়ায় অত্র বিবাদীদের বর্ণনা পত্র দৃষ্টে বাদীপক্ষের কেস মায় খরচায় ডিসমিস করিবার উপযুক্ত হইতেছে।
সিএস খতিয়ান ৫/৩/২০২০ তারিখের হাড়িগড়া মৌজা জেএলনং-৩৪ খতিয়ান নম্বর ২৪২৫ জোত মানিকচন্দ্র মিত্র দং- রামলাল মিত্র। স্বতের বিবরণ ও দখলকার রায়তি এসারত খাঁ পিং- তোরাপ খাঁ।
আর এস খতিয়ান হাড়িগড়া মৌজা জেএলনং- ২১ খতিয়ান নং- ৭৯৫ মালিক, অকৃষি প্রজা বা ইজারাদারের নাম ও ঠিকানা দং- শুকুরন নেছা জং- বারিক ফকির সাং- ডুমুরতলা। ২৮৪৯ ডাঙ্গা ৮০ শতাংশ জমি।
২৪/৯/১২ তারিখে মামলা নম্বর এমপি ৪৬৯/১২ ধারা ১৪৪, এ ১ম পক্ষ মোঃ জহর আলী ফকির ও ২য় পক্ষ খন্দকার আবুল কালাম। আদেশ ২২/৬/১৫ তারিখে ইউএলও এর প্রতিবেদন এবং জবাব নথিতে আছে উভয়পক্ষ হাজির। মামলা খারিজ করা হলো এবং ১ম পক্ষকে দেওয়ানী আদালতে প্রতিকারের জন্য বলা গেল।
হাড়িগড়া গ্রামের শাহাদাৎ মোল্লার পুত্র এনামুল মোল্লা জানান, এই জমি মোকছেদ খন্দকারের কাছে থেকে আমার বাপ-চাচারা ৩০-৩৫ বছর পূর্বে বা আগে ওনি মারা যাওয়ার পর জমি লেখা হয়নি বা লিখে দিতে পারিনি তার আমরা সেই ভাবে জমি খেয়ে আসতেছি। মোকছেদ খন্দকারের ৫৩ শতক দলিল আছে এবং ১৯৬২ সালের রেকর্ড মোকছেদ খন্দকার নামে আছে। এই মর্মে আমরা জমির ফসল খেয়ে আসতেছি। হাল রেকর্ড ফকিরদের নামে হয়ে গেছে আর এস রেকর্ড। আরএস দাগ ভুল আছে ১৯৬২ সালে ১৮৬৮ সূচি পরচায়ে দেখাচ্ছে ১৮৯৮ যা এখান থেকে অনেক দূরে সেই জমিটা। আর সেই ভুল হওয়ার কারণে মিসকেস আবার স্বত্বপ্রচারের জন্য রেকর্ড সংশোধন মামলা করা হয়েছে। আমরা এই জমি ৩০-৩৫ বছর দখল করে খাচ্ছি। এই কাগজপত্র আমাদের আছে এর আগেও ১৪৪ ধারা করে ছিলো ফকিররা। নায়েব আমাদের পক্ষে প্রতিবেদন দিয়েছে, পুলিশ প্রতিবেদন আমাদের পক্ষে ও ১৪৪ ধারায় দুইটা রায় আমাদের পক্ষে। ২০২৫ সালের মে মাসের মামলা ডিসমিস বিষয়ে জানতে চাইলে সে বলে ভুল দাগ আছে তাই মিসকেস মামলা করা হয়েছে কোর্টে। আর জমি আদালত যাকে দিবে সেই পাবে।

এনামুল মোল্লা কাগজপত্র দেখান, পাকিস্তান আমলের ৭৭৬ নং ৭৭২ নম্বর দলিল, দলিল গ্রহীতা- খোন্দকার মোকছেদ, দাতা- সৈয়দ হাসেম আলী পিতা- সৈয়দ মোবারক আলী। ২৮৬৮ দাগে ৮৩ শতাংশ।
২৪/৩/১২ তারিখের এসএ খতিয়ান ৩০৮ জেএলনং-৩৪, ধানী ২৮৬৮ দাগ ৮৩ শতাংশ জমি। মোকছেদ খন্দকার পিং- আকমল খন্দকার। ৯-২৮৯-২৯১-৭৭২-১৯৫২/ ২৮৬৮ দাগে ৮৩ শতক ৫/১১/১৯৪৮ তারিখে ১০ বিঘার অধিক জমী হস্তান্তর করি নাই গ্রহীতা খোন্দকার মোকছেদ আলী ও দাতা সৈয়দ হাসেম আলী।
স্বত্ব প্রচারের বাবদ মোকদ্দমা নড়াইল বিজ্ঞ সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে বাদী খন্দকার মোতাহের হোসেন ও বিবাদী শুকুরন নেছার ওয়ারেশ বৃন্দগণকে ২৮৬৮ দাগের ৮৩ শতাংশ জমি নিয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট