
যশোর অফিস : যশোর শহরের বারান্দীপাড়া এলাকায় এক নারী উদ্যোক্তার বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা, মারধর, শ্লীলতাহানি, চাঁদাবাজি ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে। তবে অভিযুক্ত পক্ষ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা অভিযোগ তুলেছে। ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
ভুক্তভোগী জেসমিন বেগম (স্বামী: আজিজুল হক) সংবাদমাধ্যমে লিখিত অভিযোগে জানান, তিনি চারটি ইজিবাইক ভাড়া দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। কয়েক মাস আগে থেকেই বৌ বাজার এলাকার তারিক হাসান চুন্না, ১নং ওয়ার্ড যুবদল সভাপতি, তার ব্যবসার দিকে নজর দিয়ে চাঁদা দাবি শুরু করে।
তার অভিযোগ অনুযায়ী, গত ৪ আগস্ট বিকেলে চুন্না, বিশাল, আকাশ, লাল্টু, সোহেল ওরফে চাকু সোহেল, শফিক, হাসান, সানু, মন্ডল, হাবিব, তুষার, আলআমিনসহ ১০-১২ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার বাড়িতে হামলা চালায়। তারা দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে, না দেওয়ায় তাকে বেধড়ক মারধর করে এবং সানু ও লাল্টু শ্লীলতাহানি ঘটায়। চুন্না ঘর তল্লাশি করে ৫০ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। এ সময় তার ২০ বছরের ছেলে রাকিব হাসানকে মারধর করে আহত করা হয় এবং ১১ মাস বয়সী শিশুর গলায় চাকু ধরে টাকা দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
জেসমিন বেগম জানান, ডাকচিৎকারে স্থানীয়রা এলে কয়েকজন হামলাকারী ধরা পড়লেও পরে দুর্বৃত্তরা এসে ভয় দেখিয়ে তাদের ছাড়িয়ে নেয়। কিছুক্ষণ পর চুন্নার নেতৃত্বে ৩০-৪০ জন পুনরায় বাড়িতে আসে এবং বস্তি এলাকা থেকে আনা প্রায় ৩০ জন নারী মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ঘটনাকে ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে।
তিনি অভিযোগ করেন, থানায় যেতে পুলিশ প্রথমে অভিযোগ নিতে চায়নি, পরে নিলেও এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি হামলার সময় ছিনিয়ে নেওয়া মোবাইল ফোন সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ফেরত পাওয়া যায়। জেসমিন বেগমের দাবি, প্রভাবশালী মহলের প্রভাবে পুলিশ কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বর্তমানে তিনি শিশু সন্তানসহ চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন এবং প্রশাসনের কাছে প্রাণ ও সম্পদের নিরাপত্তা ও চাঁদাবাজ চক্রের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
অন্যদিকে অভিযুক্ত যুবদল নেতা চুন্না ও স্থানীয় কয়েকজন এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তারা জানান, গত ৪ আগস্ট জেসমিন বেগমের ভাড়া দেওয়া একটি ইজিবাইক মেরামতের বিল নিয়ে চালক ও তার মধ্যে বিরোধ হয়। মীমাংসার জন্য জেসমিন বেগম নিজেই চুন্না ও কয়েকজনকে ডাকেন। তাদের দাবি, সেখানে কোনো চাঁদাবাজি বা ভয়ভীতি প্রদর্শনের ঘটনা ঘটেনি। বরং মীমাংসার সিদ্ধান্ত পছন্দ না হওয়ায় জেসমিন বেগম ও তার সহযোগীরা এলাকাবাসীর ওপর হামলা চালিয়ে কয়েকজনকে আহত করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও দাবি করা হয়, জেসমিন বেগম যশোরের মাদক সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য মুরাদ হোসেনের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা এবং তাদের মধ্যে অনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে বলে এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে। তারা বিষয়টি সাংবাদিকদের গভীরভাবে অনুসন্ধানের আহ্বান জানান।
বর্তমানে উভয় পক্ষের অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে এলাকা উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। স্থানীয়রা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছেন।
Like this:
Like Loading...