যশোর অফিস: যশোরে জামায়াতের গণসমাবেশ ও গণমিছিল অনুষ্ঠিত, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকীতে সরকারের সমালোচনা ও ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র গঠনের অঙ্গীকার
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী,যশোর জেলা শাখার উদ্যোগে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে গণসমাবেশ ও গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত যশোর জজ কোর্ট মোড়ে (খেজুর গাছ ভাস্কর্য) অনুষ্ঠিত এ গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা নায়েবে আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমান। সমাবেশ শেষে খেজুর ভাস্কর্য থেকে মনিহার পর্যন্ত এক বিশাল গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
গণসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলের পরিচালক মোবারক হোসাইন। সমাবেশে কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সূচনা শেষে একে একে বক্তৃতা করেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
বক্তব্যে যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী আব্দুল কাদের বলেন,এই নতুন বাংলাদেশ আনার জন্য ২ হাজার মানুষ শহীদ হয়েছেন, ৬ শতাধিক মানুষ পঙ্গু হয়েছেন, ২৫ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। কিন্তু এখন চাঁদাবাজ ও জুলুমবাজদের উত্থান হয়েছে। দেশের মানুষ জুলুমমুক্ত, ঘুষমুক্ত বাংলাদেশ দেখতে চায়। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্রক্ষমতায় এলে ইনশাআল্লাহ দুর্নীতি ও ঘুষমুক্ত শাসনব্যবস্থা কায়েম করবে।”
জেলা সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল গোলাম কুদ্দুস বলেন,“২৪-এর গণবিপ্লব ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়েছে ঠিকই, তবে বাংলাদেশ এখনো আধিপত্যবাদীদের কবল থেকে মুক্ত নয়। আমরা আয়নাঘর প্রতিষ্ঠাকারী খুনি হাসিনা ও তার দোসরদের বিচার চাই। যশোরের ৫টি আসন উপহার দিয়ে আমিরে জামায়াতের নেতৃত্বকে শক্তিশালী করতে হবে।”জেলা সেক্রেটারি জেনারেল আবু জাফর সিদ্দিক বলেন,“গণঅভ্যুত্থান সফল হলেও এখনো তার অর্জনকে নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্র চলছে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে একটি ফ্যাসিবাদমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়া। আমরা সরকারকে আহ্বান জানাই—সৈরাচারের দোসরদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনুন।”
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোবারক হোসাইন বলেন,“১৫ বছর ধরে পাথরের মতো চেপে থাকা সৈরাচারের পতন ঘটেছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে। এই আন্দোলনকে আমাদের বুকে ধারণ করতে হবে। শেখ হাসিনা ওই সময় পেটোয়া বাহিনীকে গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার পাঁচ দিনের মাথায়ই তার সরকারের পতন ঘটে। শহীদ পরিবারের পাশে জামায়াতে ইসলামই ছিল, সরকার কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়নি।”
তিনি আরও বলেন,“আগামী নির্বাচনে জামায়াতে ইসলাম যদি রাষ্ট্রক্ষমতায় আসে, তবে দেশে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দুর্নীতির অবসান ঘটবে এবং ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান হবে সত্যিকার অর্থে সফল।”
গণসমাবেশ শেষে একটি সুসংগঠিত, শৃঙ্খলিত ও শান্তিপূর্ণ গণমিছিল জজ কোর্ট মোড় থেকে শুরু হয়ে মনিহার মোড় পর্যন্ত প্রদক্ষিণ করে।