যশোর প্রতিনিধি: যশোরে যাত্রীবাহী লোকাল বাসের চাকার নিচে পড়ে মারিয়া সুলতানা (১৩) নামে এক স্কুলছাত্রী আহত হয়েছে। বুধবার সদর উপজেলার কোদালিয়া বাজারে যশোর-মাগুরা সড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
আহত মারিয়া সুলতানা লেবুতলা ইউনিয়নের কোদালিয়া গ্রামের মাহবুর রহমানের মেয়ে এবং খাজুরা মনিন্দ্রনাথ মিত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান,প্রতিনিদের মতো স্কুলে যাওয়ার জন্য সড়কের পাশে বাসস্টপেজে দাঁড়িয়ে ছিলেন মারিয়া। যশোর থেকে ছেড়ে আসা মাগুরাগামী যাত্রীবাহী লোকাল বাস সকাল ৯টার পরপরই কোদালিয়া বাজারে এসে থামে। এ সময় মারিয়া বাসে উঠতে গেলে তাড়াহুড়ো করে চালক বাস ছেড়ে দিলে তার কোমরের ওপর দিয়ে বাসের পেছনের চাকা উঠে যায়। এতে মারিয়ার শরীর ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। এ সময় গুরুতর অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন স্থানীয়রা। বেলা ১২টার দিকে আহত ওই শিক্ষার্থীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।
এদিকে, ঘটনার পরপরই বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বাসটি ভাঙচুর করে এবং যশোর-মাগুরা মহাসড়ক অবরোধ করে খাজুরা বাজার বাসস্ট্যাণ্ড এলাকায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। এতে সড়কের দুই পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় এবং চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা যাত্রীরা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কোতয়ালি মডেল থানার ওসি আবুল হাসনাত ঘটনাস্থলে এসে দ্রুত সময়ে বাস চালক ও হেলপারকে আটক করার কথা জানালে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেয়।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানান, যশোর-মাগুরা রুটের লোকাল বাসের মালিক ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে টিকিট বিক্রিতে হয়রানিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। চালকরা যশোর থেকে হুদার মোড় পার হয়ে দ্রুতগতিতে খাজুরা বাজার পর্যন্ত বাস চালান এবং হেলপাররা তাড়াহুড়ো করে যাত্রী তোলেন। শিক্ষার্থীসহ সাধারণ যাত্রীদের জীবনের দাম নেই তাদের কাছে। প্রশাসন শিক্ষার্থীদের দেয়া আশ্বাস পূরণ না করলে পরবর্তীতে কঠোর আন্দোলনে যাবেন তারা।
খাজুরা মনিন্দ্রনাথ মিত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরুন্নাহার জানান, আহত শিক্ষার্থীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নিয়েছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের সঙ্গে কথা চলছে। পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানান তিনি।
শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নিয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি আবুল হাসনাত খানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোনকল রিসিভ করেননি।
এদিকে, বেলা তিনটার দিকে আহত শিক্ষার্থীর সাথে থাকা ওই স্কুলের শিক্ষক জামাল হোসেন বলেন, আমরা এখন ঢাকার যাত্রাবাড়ী পৌঁছেছি। মেয়েটির অক্সিজেন ও রক্ত চলছে।