অনুষ্ঠানঃগ্রামের কৃষি ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নের পথিকৃতের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা
যশোর অফিস : যশোরের শার্শা উপজেলার পাকশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বুধবার (২৩ জুলাই ) দুপুরে অনুষ্ঠিত হলো বিশিষ্ট সমাজ সংস্কারক ও পল্লী চিকিৎসক ডা. আব্দুল মান্নান খানের স্মরণসভা ও দোয়া অনুষ্ঠান।
এ আয়োজন ছিল তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি এবং নতুন প্রজন্মের সামনে অবদান তুলে ধরার এক অনন্য উদ্যোগ।
স্মরণসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যশোর শিক্ষাবোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর আমিরুল আলম খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন পাকশিয়া আইডিয়াল ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. আনিছুর রহমান, পাকশিয়া সম্মিলিত বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহাবুদ্দিন।
সভাপতিত্ব করেন পাকশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. আবুল কালাম এবং সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন প্রধান শিক্ষক মো. হাবিবুর রহমান।
সভায় বক্তারা বলেন, ডা. আব্দুল মান্নান শুধুমাত্র একজন চিকিৎসক ছিলেন না, তিনি ছিলেন শার্শার কৃষি উন্নয়নের একজন নির্ভীক অগ্রদূত। ষাটের দশকে ইরি-৮ ধানের চাষ ও কপোতাক্ষ নদ থেকে সেচ চালু করে তিনি যে কৃষি বিপ্লবের সূচনা করেছিলেন, তা আজ কাশীপুর অঞ্চলের আধুনিক কৃষির ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত। সেই সময়ে যখন সেচ ও বিদেশি ধান নিয়ে ছিল নানা ভীতি ও কুসংস্কার, তখন তিনি নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন প্রযুক্তি ও নব চিন্তার দায়িত্ব।
শুধু কৃষিতে নয়, শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রতিও তার ছিল গভীর অনুরাগ। ১৯৭৭ সালে ডিহি ইউনিয়ন পাবলিক লাইব্রেরির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তিনি তরুণদের বই পড়ায় উৎসাহিত করেন এবং পাকশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পাকশিয়া সম্মিলনি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পাকশিয়া আইডিয়াল কলেজ, শিববাস শিশুকানন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। তিনি ২৩ জন শিক্ষার্থীকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে সহায়তা প্রদান করেন।
স্মৃতিচারণে বলা হয়, তিনি ছিলেন সাহসী কিন্তু বিনয়ী, ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতেন, এবং নতুন কিছু করার জেদ ছিল তাঁর মধ্যে। তিনি আমাদের গ্রামের এক নীরব আলোকবর্তিকা ছিলেন।
অনুষ্ঠানে এলাকার শিক্ষার্থী, কৃষক, শিক্ষক, সমাজকর্মীসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন এবং একসাথে দোয়া করে প্রিয় মানুষটির আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।
আব্দুল মান্নান খান যশোর জেলার অন্তর্গত শার্শা উপজেলার শিববাস গ্রামে ৪ মে ১৯৩৭ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। তার বাবার নাম জাহাবক্স খান ও মায়ের নাম বিবিছন নেছা খান
উল্লেখ্য, গত ৯ জুলাই বুধবার বিকেলে বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন।