নিজেস্ব প্রতিবেদক: যশোরের মনিরামপুর থানার পুলিশ দীর্ঘদিনের পলাতক ও কুখ্যাত চাঁদাবাজ, খেদাপাড়া ইউনিয়নের দিঘিরপাড় গ্রামের টুকু মিয়ার ছেলে আজিজ মিয়াকে অবশেষে অভিনব কৌশলে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। প্রতারণা ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে এলাকাবাসীর নিকট আতঙ্ক হয়ে উঠেছিল আজিজ মিয়া। তার বিরুদ্ধে থানায় দায়েরকৃত একাধিক অভিযোগে ভুক্তভোগীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল তার গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।
স্থানীয় ও ভুক্তভোগীদের অভিযোগে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে দিঘিরপাড় এলাকায় নিজের প্রভাব বিস্তার করে অসংখ্য সাধারণ মানুষের কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে বিপুল অঙ্কের টাকা। হাবিবুর রহমান নামের একজনের কাছ থেকে ইসলামী ফাউন্ডেশনে চাকরি দেওয়ার নামে আদায় করে দুই লক্ষ পঁচিশ হাজার টাকা। শুধু তাই নয়, নিয়মিত মাসিক দশ হাজার টাকা চাঁদা দেওয়ার হুমকিও দিয়ে আসছিল সে। একই গ্রামের সাজ্জাদ হোসেনের কাছ থেকেও প্রতারণার মাধ্যমে আদায় করে আরও এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা। অভিযোগ আছে, গ্রামের আরও অনেক নিরীহ মানুষের কাছ থেকে একইভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে আজিজ মিয়া।
এমন একজন কুখ্যাত প্রতারককে গ্রেফতারে দীর্ঘদিন নজরদারিতে রাখে মনিরামপুর থানা পুলিশ। ওসি মোঃ বাবলুর রহমানের দক্ষ ও বিচক্ষণ নেতৃত্বে অবশেষে এক কৌশলগত অভিযানের মাধ্যমে কৃষক ও শ্রমিক সেজে পুলিশ সদস্যরা তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন। এই সফল গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে মনিরামপুরে অপরাধ দমনের ক্ষেত্রে আরও একটি মাইলফলক স্থাপন করলো থানা পুলিশ।
ওসি মোঃ বাবলুর রহমান জানান, আমরা আইনের শাসনে বিশ্বাসী। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা ও চাঁদাবাজির মতো অপরাধে জড়িত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। মনিরামপুর থানা পুলিশ জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আজিজ মিয়ার গ্রেফতার সেই প্রতিশ্রুতিরই বাস্তব প্রতিফলন।” তিনি আরও বলেন, “অভিযানে অংশ নেওয়া পুলিশের সদস্যদের অভিনন্দন জানাই, যারা ধৈর্য, সাহস ও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে এই কুখ্যাত চাঁদাবাজকে আইনের আওতায় এনেছেন।
তার বিরুদ্ধে মনিরামপুর থানায় দায়েরকৃত চাঁদাবাজির মামলার নম্বর ১২। মামলার তদন্ত চলছে এবং শিগগিরই তাকে আদালতে হাজির করা হবে।
এদিকে আজিজ মিয়ার গ্রেফতারের খবরে এলাকায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন ভুক্তভোগী ও সাধারণ মানুষ। তারা প্রশাসনের এমন কার্যকর পদক্ষেপে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এভাবেই যদি প্রতারক ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তাহলে সমাজে প্রকৃত সুশাসন ও শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব।