নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোর শহরের পালবাড়ী থেকে শিক্ষা বোর্ড হয়ে মনিহার মোড় পর্যন্ত প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি এই মুহূর্তে চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী। সাবেক মানসী সিনেমা হলের সামনে থেকে শুরু করে মার্কাজ মসজিদ হয়ে শিক্ষাবোর্ড পর্যন্ত রাস্তার বিভিন্ন অংশে বড় বড় গর্ত পানি কাঁদা বোঝাই। গর্তে পানি জমে রাস্তার চেহারা পাল্টেছে। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে এই গর্তগুলো জলাশয়ে পরিণত হয়েছে এখন।
সড়কটি যশোরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলার সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত। প্রতিদিন লাখ লাখ যাত্রী ও হাজার হাজার যানবাহন এই পথে চলাচল করে। কিন্তু রাস্তার বেহাল অবস্থায় প্রায় দুর্ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে ইজিবাইক, মোটরসাইকেল, রিকশা ও সিএনজিচালিত যানবাহন গর্তে পড়ে নস্ট হয়ে যাচ্ছে। পানি জমে থাকায় যানবাহনের চাকা গর্তে আটকে গিয়ে তৈরি হচ্ছে যানজট।
উপশহরের বাবলাতলা এলাকার বাসিন্দারা জানান, ‘দীর্ঘদিন ধরে এই রাস্তায় স্থায়ী কোনো সংস্কার হয়নি। বিভিন্ন সময় জনপ্রতিনিধিরা পরিদর্শনে এসে আশ্বাস দিলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। প্রতিদিন যাতায়াতে মনে হয় যেন ডোবা এঁটেল বিল পার হচ্ছি।’
অভিযোগ করে ট্রাকচালকরা বলেন, ‘এই রুট দিয়ে মাগুরা, ফরিদপুর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, মেহেরপুরসহ আশপাশের জেলা থেকে ঢাকাগামী অসংখ্য গাড়ি যাতায়াত করে। অথচ রাস্তার করুণদশায় প্রতিদিন বিভিন্ন গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে। সংস্কারে কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।’
এই সড়কের গায়ে রয়েছে যশোর শিক্ষা বোর্ড, সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্রতিদিন হাজার হাজার শিক্ষার্থী এই সড়কে যাতায়াত করে। ফলে অভিভাবকরা রয়েছেন চরম উদ্বেগে।
কয়েক জন অভিভাবক জানান, ‘রাস্তাটির করুন অবস্থায় সন্তানকে পাঠিয়ে সারাক্ষণ দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়।
যশোর পৌরসভা এবং সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের আওতায় থাকা এই সড়কটির দিকে দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর কোনো সংস্কার হয়নি। সর্বশেষ গত ঈদুল ফিতরের আগে ইট-খোয়া দিয়ে তাৎক্ষণিক চলাচলের উপযোগী করেছিল সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এ কারণে বৃষ্টির পানিতে অল্প প্রলেপ দেওয়া পিচ উঠে বেরিয়ে এসেছে ইট-খোয়া। যানবাহনের চাপে উঠে আসছে সেগুলো। তৈরি হচ্ছে গর্ত। আর গর্তে জমে থাকা পানি রাস্তার অবস্থা আরও ভয়াবহ করেছে। কোথাও কোথাও পানি জমে এত গভীর যে বড় ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি র য়েছে সেখানে।
যশোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া জানান, ‘সড়কটি সংস্কারে সাড়ে ১৪ কোটি টাকার টেন্ডার হয়েছে। তবে কাজ শুরু করতে এখনো ঠিকাদার নিয়োগের অনুমোদন প্রয়োজন। অনুমোদন পেতে দুই থেকে তিন মাস সময় লাগতে পারে। তাছাড়া, বৃষ্টির আধিক্কে আপদকালীন সংস্কার কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।