কালিগঞ্জ (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলায় এক প্রবাসী নারীর ছবি ও ভিডিও বিকৃত করে (এডিট করে) ফেসবুক ও টিকটকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় ভুক্তভোগীর মা ও ধলবাড়িয়া ইউনিয়নের হরিখালী গ্রামের মৃত শোকর আলীর স্ত্রী মোছাঃ লুৎফর নেছা বেগম (৫৮),থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
থানায় দাখিল করা অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, কালিগঞ্জ উপজেলার পানিয়া গ্রামের মৃত গোলাম মোস্তফার ছেলে আব্দুল আলিম (৩৫) ও তার সহযোগী একই গ্রামের জাহিদ হোসেন (৩০) পরিকল্পিতভাবে বাদিনীর কন্যা হালিমা খাতুনের (৩০) বিভিন্ন ছবি সম্পাদনা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে আসছে। এসব বিকৃত ও অশ্লীল ছবিতে হালিমার শারীরিক অঙ্গভঙ্গিকে বিকৃতভাবে তুলে ধরা হয়। এছাড়া তার ছবি বিভিন্ন দেব-দেবীর মূর্তির সাথে এবং মাদকদ্রব্যের ছবির সঙ্গে জোড়া দিয়ে এবং অশ্লীল কনটেন্ট আকারে প্রকাশ করা হচ্ছে।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে,অভিযুক্তরা শুধু হালিমা নয়, তার তিন বোন, এক ভাই ও অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনের ছবিও কেটে বিকৃত করে বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যসহ ছড়িয়ে দিচ্ছে। তারা ভুয়া ফেসবুক আইডি(যেমন“অচেনা মানুষ”)খুলে নিয়মিত এসব পোস্ট করছে।
জানা যায়,অভিযুক্ত আব্দুল আলিমের সাথে ভুক্তভোগী হালিমা খাতুন ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর থেকেই আলিম তার স্ত্রীর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতো। প্রায় দেড় বছর আগে নির্যাতনের কারণে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। বর্তমানে হালিমা জীবিকার প্রয়োজনে সৌদি আরবে প্রবাস জীবন কাটাচ্ছেন এবং সেখান থেকেই সন্তানদের লালন-পালন করছেন।
হালিমার মা লুৎফর নেছা বেগম অভিযোগে উল্লেখ করেন,“তালাকের পর থেকেই আলিম প্রতিশোধমূলক আচরণ শুরু করে। সে আমার মেয়ের ছবি বিকৃত করে মানসম্মান ক্ষুণ্ন করছে। এতে শুধু হালিমা নয়, আমাদের পুরো পরিবারের সামাজিক মর্যাদা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”
সর্বশেষ ১৭ আগস্ট ২০২৫ সকাল ১০টার দিকে “অচেনা মানুষ” নামের ফেসবুক আইডি থেকে হালিমার বিকৃত ছবি পোস্ট করা হয়, যা পরিবারের সদস্যদের চরম মানসিক চাপে ফেলে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আব্দুল আলিম ও তার সহযোগী জাহিদ হোসেনকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা অভিযোগ অস্বীকার করেন। তাদের দাবি, এসব ঘটনার সঙ্গে তারা জড়িত নন।
কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ হাফিজুর রহমান বলেন,“আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”