নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের ইতিহাস বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায়, সহযোগিতায় ও তত্ত্বাবধানে পরিচালিত বহুমাত্রিক জ্ঞানচর্চার সংগঠন ‘ইতিহাস ক্লাব’ সম্প্রতি আয়োজন করেছিল ‘দ্বিতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সফর অনুষ্ঠান ২০২৫’।
গত ৯ আগস্ট ২০২৫, শনিবার সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ঐতিহাসিক ধূমঘাট, প্রতাপাদিত্যের রাজধানী, বংশীপুর মোঘল মসজিদ, যশোরেশ্বরী মন্দির, হাম্মামখানা, ফ্রেন্ডশীপ হাসপাতাল, জমিদার হরিচরণের বাড়ি, নলতা আহ্ছানিয়া মিশন ও নলতা শরীফ এবং দেশের ফুসফুসখ্যাত সুন্দরবন ভ্রমণের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় এ নিদর্শন সফর। দিনব্যাপী এ সফরে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানসমূহ প্রত্যক্ষ পরিদর্শনের পাশাপাশি অনুষ্ঠিত হয় রম্য বিতর্ক, কুইজ, ক্রীড়া, র্যাফেল ড্র, সনদ ও পুরস্কার বিতরণ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। তবে বিরূপ আবহাওয়ার কারণে পরিকল্পিত ‘প্রতাপাদিত্য’ বিষয়ক ওপেন-এয়ার সেমিনার আয়োজন সম্ভব হয়নি।
এ কারণে সফর-উত্তর সময়ে পৃথকভাবে আজ সকাল দশটায় ‘যশোহরের রাজা প্রতাপাদিত্যের রাজধানী ‘ধূমঘাট’ সন্ধানে: একটি পর্যালোচনা’ শীর্ষক দিনব্যাপী সেমিনারের আয়োজন করা হয় ইতিহাস বিভাগের স্মার্ট ক্লাসরুমে। এতে প্রধান অতিথি ও আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের অধ্যক্ষ, জ্ঞানানুরাগী, গবেষক ও লেখক প্রফেসর ড. মো. মিজানুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কলেজের শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মো. হারুন অর রশিদ, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মোঃ আব্দুল কাদের, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মোঃ জিল্লুর রহমান, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক অধ্যাপক মোঃ আখতার হোসেন ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. খ. ম. রেজাউল করিম। সেমিনারে সেশন প্রধান ছিলেন ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর শামীমা আখতার। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ইতিহাস ক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুরুন্নবী হৃদয়।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইতিহাস ক্লাবের সদস্য সোহানুর রহমান। শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলোচক হিসেবে ছিলেন সম্মান দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তরুণ আলোচক শিমন বিশ্বাস। সমগ্র অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইতিহাস ক্লাবের সভাপতি মো. আল শাহারিয়া ইমন। কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ প্রায় ১৫০ জনের অধিক এতে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মোঃ আব্দুল কাদেরকে আগামীকাল অবসরজনিত বিদায়ক্ষণপূর্বে বিশেষ সম্মাননা জানানো হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে সম্মিলিত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হয়। এছাড়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পর্বে যন্ত্রসঙ্গীত পরিবেশন করেন ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক সুভাষ চন্দ্র ভৌমিক, তবলায় সঙ্গত দেন ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের প্রভাষক স্বরূপ কুমার দাস। শেষ বিকেলে একটি মনোরম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় এবং বিতর্ক প্রতিযোগিতা ও সেমিনারে অংশগ্রহণকারী সকলকে সনদপত্র প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে শেষে সকল অংশগ্রহণকারীর হাতে একটি করে বৃক্ষের চারা তুলে দেওয়া হয়। সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইতিহাস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিত রায়, স্বপ্না খাতুন ও লিমা খাতুন।
উল্লেখ্য, ওপেন-এয়ার সেমিনার ও সফরের পূর্বে অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. মিজানুর রহমান উল্লিখিত প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনাসমূহের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ও গবেষণা-ভিত্তিক আলোচনা শিক্ষার্থীদের সামনে উপস্থাপন করেন।