প্রিন্ট এর তারিখঃ জুলাই ২৭, ২০২৫, ১০:৪৯ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুলাই ১৮, ২০২৫, ৩:২৭ পি.এম
জেলের ছদ্মবেশে অভিযান, আলোচিত এসিড নিক্ষেপকারী পলাতক আসামি গ্রেফতার
যশোর অফিস : প্রায় দুই সপ্তাহ পলাতক থাকার পর আলোচিত এসিড নিক্ষেপ মামলার প্রধান আসামি জসীম (৪০) কে নাটকীয় অভিযানে গ্রেফতার করেছে ঝিকরগাছা থানা পুলিশ। গত ১৭ জুলাই বিকেলে নড়াইল জেলার প্রত্যন্ত বিল এলাকায় জেলের ছদ্মবেশ ধারণ করে চালানো অভিযানে তাকে আটক করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ছয় বছর আগে ভিকটিমের নাভারণ এলাকায় বিয়ে হয়। পারিবারিক কলহের জেরে ডিভোর্সের পর চার বছরের সন্তানকে নিয়ে সে বাবার বাড়িতে বসবাস শুরু করে। একই এলাকায় ভাড়া থেকে দিনমজুরের কাজ করত আসামি জসীম। সুযোগ বুঝে সে ভিকটিমকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়, যা ভিকটিম ও তার পরিবার ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে।
প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের পর থেকেই জসীম ভিকটিমকে ফোনে বিরক্ত করতে থাকে। অবস্থা আরও খারাপ হয় গত ৩ জুলাই রাতে। রাত আনুমানিক ৮টার দিকে ভিকটিমের পরিবারের পুরুষ সদস্যরা বাজারে গেলে সুযোগ নিয়ে জসীম বাড়ির জানালার পাশে অবস্থান নেয় এবং ভিকটিমকে লক্ষ্য করে এসিড নিক্ষেপ করে। এতে ভিকটিম, তার মা ও ছোট ভাই দগ্ধ হন।
স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে ভিকটিমের বাবা ঝিকরগাছা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
এ ঘটনা পুলিশ প্রশাসনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। যশোরের পুলিশ সুপার আসামিকে দ্রুত গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। এরপর থেকেই থানা পুলিশসহ একাধিক টিম মাঠে নামে।
অবশেষে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ১৫ জুলাই পুলিশ জানতে পারে আসামি লোহাগড়া উপজেলার আমাদাহ এলাকায় অবস্থান করছে। অভিযান চালিয়ে সেদিন ধরা না পড়লেও অবশেষে ১৭ই জুলাই বিকালে নড়াইলের কামাল প্রতাপ বিলের মাঝে তাকে ঘিরে ফেলে পুলিশ। পুলিশের এসআই তাপসের নেতৃত্বে একটি টিম জেলের ছদ্মবেশে বিলের মধ্যে প্রবেশ করে। পুলিশের উপস্থিতি বুঝতে পেরে জসীম পানিতে ঝাঁপ দিলে এসআই তাপসও ঝাঁপ দেন এবং ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে তাকে গ্রেফতার করেন।
গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জসীম ঘটনার দায় স্বীকার করেছে। তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, এমন বর্বরোচিত ঘটনা প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা এবং নারী নিরাপত্তা নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত