ডেস্ক নিউজ, ৭ জুন, ২০২৫ : নির্দলীয়-নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত অগ্রাহ্য করে নিজেদের নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
শুক্রবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব অভিমত ব্যক্ত করা হয় বলে জানা গেছে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় স্থায়ী কমিটির ওই সভায় ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি পুনর্ব্যক্ত করা হয়।
বিএনপি’র অভিযোগ, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় ঐক্যমতের কথা বললেও বাস্তবে একটি বিশেষ গোষ্ঠীর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সিংহভাগ রাজনৈতিক দলের মতামত অগ্রাহ্য করছে। এতে তাদের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। ফলে দেশের জনগণের মধ্যে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের সম্ভাবনা নিয়ে শঙ্কা তৈরি করছে।
সভায় জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ পর্যালোচনা করে সর্বসম্মতভাবে মতপ্রকাশ করা হয় যে, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে দেওয়া ড. ইউনূসের বক্তব্য প্রসঙ্গ ছাড়িয়ে রাজনৈতিক ভাষণে পরিণত হয়েছে।
ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বন্দর, করিডোরসহ এমন বিষয় উপস্থাপন করেছেন যা তার ভাষায় অন্তর্বর্তী সরকারের ‘তিনটি ম্যান্ডেট’-এর আওতাভুক্ত নয়। সভায় আরো বলা হয়, ভাষণের শব্দচয়নে তিনি রাজনৈতিক ভব্যতার সীমা অতিক্রম করেছেন, যা দুঃখজনক।
প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের যে সময়সীমা প্রস্তাব করেছেন তা নিয়েও আলোচনায় হয় সভায়। সেখানে বলা হয়, এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন হলে আবহাওয়ার বৈরিতা এবং রমজানের কারণে প্রচার ও অন্যান্য কার্যক্রমে জটিলতা তৈরি হতে পারে। এতে নির্বাচনের স্বাভাবিকতা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। সভায় আরো বলা হয়, ভাষণে কেন ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন সম্ভব নয়, সে বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা তিনি দেননি।
সভায় আরো বলা হয়, প্রায় দেড় যুগ ধরে মৌলিক ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত দেশের জনগণ গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গুম, খুন, জেল-জুলুম ও নির্যাতনের মধ্য দিয়েও আন্দোলন চালিয়ে গেছে। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের মাধ্যমে সেই আন্দোলনের বিজয় অর্জিত হয়েছে। কিন্তু নির্বাচন অনুষ্ঠানে অহেতুক বিলম্ব জনগণকে হতাশ ও ক্ষুব্ধ করেছে।
তাই সভায় রমজান, এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষা এবং আবহাওয়া ইত্যাদি বিবেচনায় ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি আবারো জানানো হয়।